হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আমরা দেশীয় সেই সমস্ত উপাদানকে সতর্ক করে দিচ্ছি, যারা সর্বোচ্চ নেতার (মদ্যিল্লুহুল আলী) বারবার দেওয়া সতর্কবার্তা সত্ত্বেও এখনো আমেরিকার সাথে আলোচনার প্রচার চালাচ্ছে। এই কার্যকলাপ শুধু জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থীই নয়, বরং তা ইরানি জনগণের ইচ্ছা ও ইসলামী প্রজাতন্ত্রের নীতিমালার সম্পূর্ণ বিপরীত। এ ধরনের প্রয়াস অভ্যন্তরীণ বিভক্তি সৃষ্টি করতে পারে এবং শত্রুরা এই মতবিরোধের সুযোগ নিতে পারে।
হাওজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গবেষণা কেন্দ্রসমূহ আয়াতুল্লাহ খামেনি (মদ্যিল্লুহুল আলী) কর্তৃক আমেরিকার সাথে পুনরায় আলোচনার বিরোধিতা ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি সতর্কবার্তার বিষয়ে নিম্নলিখিত বিবৃতি প্রকাশ করেছে:
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
یا أَیُّهَا الَّذینَ آمَنوا لا تَتَّخِذوا بِطانَةً مِن دونِکُم لا یَألونَکُم خَبالًا وَدّوا ما عَنِتُّم قَد بَدَتِ البَغضاءُ مِن أَفواهِهِم وَما تُخفی صُدورُهُم أَکبَرُ ۚ قَد بَیَّنّا لَکُمُ الآیاتِ ۖ إِن کُنتُم تَعقِلونَ
(সূরা আলে ইমরান: ১১৮)
আমরা দাহে ফজর এই মহান দিনগুলোর প্রতি অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি এবং মহান আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, যিনি আমাদের জন্য এক প্রজ্ঞাবান, দূরদর্শী ও শক্তিশালী নেতা দান করেছেন।
সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা ইমাম খামেনি (মদ্যিল্লুহুল আলী) ১৯ বাহমান ১৪০৩ (ফেব্রুয়ারি ২০২৫)-এর ভাষণে পুনরায় আমেরিকার সাথে আলোচনার বিপক্ষে দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। আমরা তাঁর এই দৃঢ় ও প্রজ্ঞাপূর্ণ অবস্থানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি এবং আমেরিকার সাথে যেকোনো রকম আলোচনা পুনরায় শুরু করার প্রচেষ্টাকে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা এটিকে দেশের সর্বোচ্চ স্বার্থ এবং ইসলামী বিপ্লবের আদর্শের পরিপন্থী বলে বিবেচনা করি।
১৯ বাহমান ১৪০৩ তারিখে দেওয়া বক্তব্যে আয়াতুল্লাহ খামেনি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, অতীতের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, আমেরিকার সাথে আলোচনায় কোনো লাভ হয়নি, বরং প্রতিবার তা দেশের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে। তিনি অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন:
তৎকালীন আমাদের সরকার বসলো, আলোচনা করলো, যাওয়া-আসা করলো, হাসলো, কোলাকুলি করলো, সব কিছু করলো; কিন্তু আমেরিকানরা সেই চুক্তি বাস্তবায়ন করলো না।
এই বক্তব্য প্রমাণ করে যে, আমেরিকা কখনো তার প্রতিশ্রুতিগুলো রক্ষা করেনি; বরং তারা আলোচনা প্রক্রিয়াকে ইরানের ওপর চাপ বৃদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। মহান নেতা স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, আমেরিকার সাথে আলোচনার পথ বুদ্ধিমানের কাজ নয়, এটি যৌক্তিকও নয়, এবং এটি সম্মানজনকও নয়। এর কারণ হলো, অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের সামনে রয়েছে।
আমরা এই বক্তব্যের ওপর জোর দিয়ে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে, আমেরিকার দীর্ঘদিনের বিশ্বাসঘাতকতা, আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা এবং ইরানি জনগণের বিরুদ্ধে অন্যায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার অতীত রয়েছে। এই দীর্ঘ অভিজ্ঞতা বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিয়েছে যে, আমেরিকার সাথে আলোচনা কেবল নিষেধাজ্ঞা ও চাপ আরও বাড়িয়ে তুলেছে, সম্পর্ক উন্নতির দিকে নিয়ে যায়নি।
সুতরাং, আমেরিকার মৌলিক নীতিতে পরিবর্তন না আসা পর্যন্ত তাদের সাথে পুনরায় আলোচনার যেকোনো প্রচেষ্টা শুধু ব্যর্থই হবে না; বরং এটি জাতীয় অবস্থানকে দুর্বল করবে এবং ইরানি জনগণের সম্মানের পরিপন্থী হবে।
আমরা সেই সমস্ত দেশীয় উপাদানকে কঠোরভাবে সতর্ক করছি, যারা সর্বোচ্চ নেতার (মদ্যিল্লুহুল আলী) বারবার দেওয়া সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে এখনো আমেরিকার সাথে আলোচনার প্রচার চালাচ্ছে। এই কার্যকলাপ শুধুমাত্র জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী নয়, বরং তা ইরানি জনগণের ইচ্ছা এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্রের নীতিমালার সম্পূর্ণ বিপরীত। এ ধরনের প্রয়াস অভ্যন্তরীণ বিভক্তি সৃষ্টি করতে পারে এবং শত্রুরা এই মতবিরোধের সুযোগ নিতে পারে।
আমরা আশা করি যে, দেশের সকল দায়িত্বশীল ব্যক্তি এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ পূর্ণ ঐক্য ও সংহতির মাধ্যমে সর্বোচ্চ নেতার দৃঢ় ও প্রজ্ঞাপূর্ণ অবস্থানকে সমর্থন করবে এবং এই অবস্থানকে দুর্বল করার যে কোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাবে। ইরানি জাতি সবসময় দৃঢ়তা ও সজাগ দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে শত্রুর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এবং মহান আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ও সর্বোচ্চ নেতার দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে নিজেদের সম্মান ও স্বাধীনতা রক্ষা করে চলেছে।
ওয়াস্সালামু আলা মান্ ইত্তাবাআল হুদা
স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ:
মাদ্রাসা ফিকহি ও গবেষণা কেন্দ্র মূসা ইবনে জাফর (আ.)
ফিকহি গবেষণা প্রতিষ্ঠান "যিক্র"
মাদ্রাসা ফিকহি সাকালাইন
মাদ্রাসা ফিকহি আলে ইয়াসিন
মাদ্রাসা আলেমিয়া আলে ইয়াসিন
বসিজ, মাদ্রাসা ইলমিয়া মাসুমিয়া, কুম
গবেষণা প্রতিষ্ঠান "লুহ ও কলম"
গবেষণা প্রতিষ্ঠান "সীরাতে সিয়াসি আহলুল বাইত (আ.)"
গবেষণা প্রতিষ্ঠান "শামসুশ শুমুস (আ.)"
গবেষণা প্রতিষ্ঠান "ইমাম হাসান আসকারি (আ.)"
ইসলামী বিপ্লব চিন্তাকেন্দ্র
আপনার কমেন্ট